রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৩ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


কবিরাজের প্রতারণার ফাঁদে নিঃসন্তান গৃহবধূরা


প্রকাশিত:
২ মার্চ ২০২১ ০০:৪৭

আপডেট:
১৩ মে ২০২৫ ০৩:৪৩

প্রতিকী ছবি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় সন্তান লাভের আশায় কথিত কবিরাজ জান্নাতুন ও সেকেন্দার দম্পতির প্রতারণার শিকার হয়েছেন অর্ধশত নিঃসন্তান গৃহবধূ। এ ঘটনায় প্রতারক কবিরাজ দম্পতির শাস্তি চেয়ে ভুক্তভোগী ৭ গৃহবধূ থানার ওসি ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের খবরে তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার গুনাহার ইউনিয়নের বড়নিলাহালী গ্রামের জান্নাতুন বেগম (৭০) ও তার স্বামী সেকেন্দার আলী চৌধুরী (৭৫) হাতে বড় লোহার বালা এবং কবিরাজি পোশাক পরে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছেন।

গ্রামবাসী তাদের চিকিৎসা বিশ্বাস না করলেও সন্তান লাভের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে এই প্রতারক দম্পতির কাছে আসেন অনেক গৃহবধূ। সরল মনে তাদের দেওয়া চিকিৎসাকে বিশ্বাস করে বেশি প্রতারণার শিকার হয়েছেন গ্রামীণ গৃহবধূরা।

সম্প্রতি ওই দম্পতির প্রতারণার বিষয়টি পরিষ্কার হলে জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার আইমাপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মৌসুমি আক্তারসহ সাতজন গৃহবধূ দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁরা প্রতারণার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, গৃহবধূর গর্ভে সন্তান লাভের চিকিৎসার ফি বাবদ কথিত ওই কবিরাজ দম্পতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।

এরপর তারা পাউডার জাতীয় ওষুধ যা পানিতে গুলিয়ে খাওয়ার জন্য প্রদান করেন। গৃহবধূরা সরল মনে বাড়ি ফিরে সেসব পাউডার পানিতে গুলিয়ে সেবন করেন। ৩০-৫০ দিনের মধ্যে গার্ভবতী নারীর মতো তাদের পেট ফুলে যায় এবং বাচ্চা আসার মতো অনুভব হয়। ফের কবিরাজ দম্পতির কাছে গেলে তাদের প্রেগন্যান্সি ট্রেস্ট করে গর্ভবতি হওয়ার রিপোর্ট দিয়ে দেন।

এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও গর্ভপাত না হওয়ায় রিপোর্টটি নিয়ে তারা গাইনি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাদের পরীক্ষা শেষে জানান তাদের পেটে কোনো বাচ্চা নেই। কথিত কবিরাজ দম্পতি তাদেরকে এইচটিসি জাতীয় হরমোন খেতে দিয়েছিলেন। তা খেয়ে তাদের পেট ফুলে বাচ্চা আসার মতো অনুভব হয়েছে। যা রিতিমতো প্রতারণা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আনারুল হক তালুকদার বলেন, কবিরাজ সেজে চিকিৎসার নামে তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করেন। এ কারণে গ্রামবাসী তাদের কখনোই বিশ্বাস করতেন না। দূর-দূরান্ত থেকে সন্তান লাভের আশায় স্বামীদের সাথে নিয়ে গৃহবধূরা সরল মনে চিকিৎসা নিতে আসতেন শুধু তারাই এর প্রতারণার শিকার হতেন।

দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আলী জানান, অভিযোগ পেয়ে সোমবার সকালে উপজেলার বড়নিলাহালী গ্রামে কথিত ওই কবিরাজ দম্পতির বাড়িতে গিয়ে চেম্বার ও বাড়ির কক্ষে তালাবদ্ধ দেখা যায়। পুলিশি অভিযান টের পেয়ে হয়তো তারা পালিয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে।

আরপি/ এসআই-১৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top