রাজশাহী সোমবার, ১১ই আগস্ট ২০২৫, ২৮শে শ্রাবণ ১৪৩২


এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে আয়া করলেন ডেলিভারি, নবজাতকের মৃত্যু!


প্রকাশিত:
১১ এপ্রিল ২০২০ ০১:৩৭

আপডেট:
১১ আগস্ট ২০২৫ ১৬:৫৯

ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আয়া (চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) হোসনে আরা বেগম এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে ডেলিভারী করাতে গিয়ে এক নবজাতককে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘটনায় পালং মডেল থানায় দুইজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।

আসামিরা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার ছোট বিনোদপুর (পশ্চিমপাড়) গ্রামের মোতালেব সরদারের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫৫) ও এনায়েত হোসেন সরদারের স্ত্রী ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আয়া হোসনে আরা বেগম। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ছোট বিনোদপুর (পশ্চিম পাড়) গ্রামের কালাচান ঢালীর মেয়ে সারমিন আক্তার (২১) ৭ এপ্রিল প্রসব বেদনা অনুভব করে। তখন স্থানীয় দাই প্রধান আসামি সুফিয়া বেগমকে নিয়োগ করা হয়।

সুফিয়া বেগম সারমিনের পরিবারকে ভীত করে এবং বলেন, নর্মাল ডেলিভারী সম্ভব না। আমার একজন পরিচিত এমবিবিএস ডাক্তার আছে তার সহযোগিতা নিলে সহজে ডেলিভারী করানো সম্ভব। তখন সারমিনের পরিবারের সাথে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রধান আসামি সুফিয়া বেগম এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়দানকারী সহযোগী আসামী হোসনে আরাকে মোবাইল ফোনে কল করে নিয়ে আসেন।

আসামিদ্বয় সারমিনকে ঘরে একা রেখে অন্যান্যদের বের করে দেয়। আসামিরা ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সারে ৯টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে একটি কন্যা সন্তান বের করে নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। পরিবারের লোকজন সারমিনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। সারমিনের মা মাকসুদা সারমিনের অবস্থা খারাপ হতে থাকলে ৮ এপ্রিল সকালে হযরত শাহজালাল হাসপাতালে নিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়।

পরে সারমিনের পরিবার জানতে পারে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়দানকারী ব্যক্তি হোসনে আরা বেগম শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের একজন আয়া মাত্র। এই বিষয়ে মাকসুদা বেগম বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় মামলা করেছেন।


বাদী মাকসুদা বেগম বলেন, আসামি সুফিয়া বেগম প্রতারণা করে আয়াকে ডাক্তার সাজিয়ে আমার মেয়ের কাছে নিয়ে আসে। আমার সাথে ১০ হাজার টাকার চুক্তিও করে। আমি তাদের সকল কথা মেনে নেই। আড়াই ঘণ্টা আমার মেয়ে সারমিনের উপর নির্যাতন করেছে তারা।

আমার মেয়ের জীবিত সন্তান ভুমিষ্ট হয় এবং আমি ওই সন্তানের কান্না শুনেছি। পরে সেই সন্তান মারা গেছে। আমি ওই ভণ্ড প্রতারকদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, সদর হাসপাতালের আয়া হোসনে আরা বেগম এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে এক নবজাতককে মেরে ফেলেছে এমন অভিযোগে এনে মাকসুদা বেগম নামে এক মহিলা মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

আরপি/এমবি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top