রাজশাহী সোমবার, ১১ই আগস্ট ২০২৫, ২৮শে শ্রাবণ ১৪৩২

রাজশাহীতে জমে উঠেছে আমের বাজার


প্রকাশিত:
১১ জুন ২০২০ ০৪:২৩

আপডেট:
১১ জুন ২০২০ ০৪:৫৬

ছবি: রাজশাহীর বানেশ্বর আমের বাজার

উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার রাজশাহীর বানেশ্বরে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরেই দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার এটি। যার সুনাম রয়েছে ফজলি আমের বাজার হিসেবে।

তবে পাকতে দেরি আছে ফজলি আমের। বেঁচাকেনা হচ্ছে গোপালভোগ, হিমসাগর (খিসারিপাত), ল্যাংড়া, লখনাসহ গুটি জাতের আম। মানভেদে এসব আমের দাম ঠিক থাকলেও চাহিদা নেই গুটি জাতের আমের।

২৫ কেজির এক ক্যারেট গুটি জাতের আম ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। পাইকারি বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও আমবিক্রি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।

বুধবার বানেশ্বর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমের পাইকারি আড়ৎ থেকে আম কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমচাষি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানান যায়, বাজারে আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া ও হিমসাগর আম। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরে শুরুরদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশ লকডাউন থাকায় আমের দাম না পেয়ে হতাশায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে লকডাউন তুলে দেওয়ায় সারাদেশ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করায় বর্তমান দামে সন্তুষ্ট বিক্রেতারা।

আম বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ল্যাংড়া প্রতি মন (৪০ কেজি) ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা, হিমসাগর ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা, গোপালভোগ ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকা, লখনা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, গুঠি জাতের আম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরেও বিক্রি হয়েছে।

রাজশাহীর দূর্গাপুরের আম ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, আমের দাম ভালোই আছে। কিন্তু আঁঠি জাতের আম কিনতে চাচ্ছে না কেউ। প্রতিবছর প্রাণ কোম্পানি আম কিনত, এবার আসেনি। আমি ২০ ক্যারেট আঁঠি আম নিয়ে আসছি, বিক্রি হয়নি পাঁচ ক্যারেটও। ২৫ কেজির এক ক্যারেট আমের দাম বলছে ২’শ থেকে ৩’শ টাকা। ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর,লখনা আমের দাম আগের তুলনায় ভালো’। ল্যাংড়া ১৭০০ টাকা মন ১০ মন বিক্রি করলাম’।

দূর্গাপুরের আমচাষি জাহিদুল ইসলাম জানান, তুলনামুলক আমের দাম ভালোই হচ্ছে। তবে করোনায় ভেবেছিলাম আম কেনার লোক থাকবে না, লোকসান হবে। কিন্তু, সে ভয় কেটে গেছে। পুলিশ রাস্তায় ধরেনা, বরং সহযোগিতা করছে।

তিনি আরো জানান, ঢাকার বড় বড় পাইকাররা তেমন আসছেন না। যারকারণে তুলানামূলক হারে কম বিক্রি হচ্ছে। এই সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে ল্যাংড়া আমের পরিমান বৃদ্ধি পাবে।

বানেশ্বর আম ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ সাইফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর আমের বড় বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয় এখানে। করোনার কারণে বাজার সেভাবে জমেনি। তবে বাজারে আমচাষি, ব্যবসায়ীরা সবাই স্বাস্থ বিধি মেনে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে। পুলিশ প্রশাসন যদি সহায়তা না করতো তাহলে আম শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হত বলে যোগ করেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল হক জানান, জেলায় আমবাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অপরিপক্ব আম বাজারজাত করা ঠেকাতে গতকয়েক বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন।

সে অনুযায়ী গত ১৫ মে থেকে গুটিসহ বিভিন্ন যাতের আম বাজারে আসতে থাকে এবং ল্যাংড়া বাজারে আসা শুরু করে ৬ জুন। এছাড়াও আম্রপালি, ফজলি নামানো হবে আগামী ১৫ জুন থেকে। সব শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং ‘বারী আম-৪’ জাতের আম।

 

আরপি/আআ-১৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top