রাজশাহী সোমবার, ১১ই আগস্ট ২০২৫, ২৮শে শ্রাবণ ১৪৩২


ভুলে ভরা রাবির সমাবর্তনে দেয়া সনদপত্র


প্রকাশিত:
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪২

আপডেট:
১১ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৫২

ছবি: সংগৃহীত

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৫ সালে মাস্টার্স শেষ করেছেন আব্দুল কাদের। অনার্সে চার বছরের ফলাফল একসঙ্গে করে দেয়া হয় বলে ‘CGPA’ লেখা হয়। মাস্টার্স এক বছরের হওয়ায় ফলাফলে লেখা হয় ‘GPA’। তবে তার মাস্টার্সের মূল সনদপত্রে লেখা হয়েছে ‘CGPA’।

২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী সানাউল হক। ইংরেজি অক্ষরে তার নামের বানান ‘Sanaul Hoque’। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন উপলক্ষ্যে প্রদত্ত মূল সার্টিফিকেটের 'hoque’ এর স্থলে লেখা হয়েছে ‘howue’।


একই বিভাগের ১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের নামের বানান ‘mehadi’ হলেও লেখা হয়েছে ‘mehedi’। শুধু সানাউল বা মেহেদী নন ওই বিভাগের আরও ১০ শিক্ষার্থীর নামের বানান ভুল হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুধু নামের বানান ভুলই নয়, কারো কারো নাম, বিভাগও পরিবর্তন হয়ে গেছে। অনেকের হলের নামের বানান মিলছে না। কারও অনার্সের নামের সঙ্গে মাস্টার্সের নামের মিল নেই। এমন ভুলে ভরা সনদপত্র পেয়েছেন রাবির একাদশ সমাবর্তনে অংশ নেয়া গ্র্যাজুয়েটরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হানুল রানার অভিযোগ তার হলের নামের বানানে ভুল ছিল। যদিও পরে সংশোধন করে নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ভুল হয়েছে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর সনদপত্রেও। তার নামই পাল্টে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম পারভেজ ২০১৬ সালে এমএসসি পাশ করেন। পরবর্তী বছরে মানোন্নয়ন পরীক্ষায় ফলাফল পরিবর্তন হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে আগের ফলাফলেরই সনদপত্র দিয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার এক কর্মকতার মেয়ে ফিন্যান্স বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করে এবারের সমাবর্তনে অংশ নেন। তবে সনদপত্রে লেখা হয়েছে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ।

এসব ভুল দায়িত্বহীনতার পরিচয় বলে মনে করেন রাবির আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনি বলেন, সাময়িক সনদপত্র কম্পিউটারে টাইপ করে দেয়া হয়। পূর্বে ভুল না হলেও এখন ভুল হওয়া মানে তারা যথাযথ সংরক্ষণ করেনি। যেখানে গ্রাজুয়েটদেরকে সম্মান দেয়ার কথা, সেখানে উল্টো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সমাবর্তনের আসল কাজইতো সনদপত্র বিতরণ।

এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই নামের বানান ভুল সংশোধন করতে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে তাদের। আবার এর পিছনে কয়েকদিন সময়ও ব্যয় করতে হবে। কর্পোরেট জীবনে ঢুকে গেছি, এখন এতো সময় দেয়াও যায় না। প্রশাসনের কাছে দাবি তারা যেন সংশোধনের বিষয়টা ফি মুক্ত এবং সহজ করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বাবুল ইসলাম বলেন, গেজেটে ভুল থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ভুল হয়। যেহেতু ভুল পাওয়া যাচ্ছে, তাই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরে এলে সংশোধনের সুযোগ পাবেন। এ জন্য কোনো অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ভারতের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রঞ্জন চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি।

 

আরপি/ এএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top