রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৩ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


এইচএসসি পরীক্ষা: রাজশাহী বোর্ডে পদার্থ বিষয়ের ৮ প্রশ্নে ৬ ভুল


প্রকাশিত:
৩১ আগস্ট ২০২৩ ০৫:৫৬

আপডেট:
৩১ আগস্ট ২০২৩ ২০:৫০

ফাইল ছবি

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রের প্রশ্নে ভুলের ছড়াছড়ি চোখে পড়েছে। শুধু মাত্র পদার্থ প্রথম পত্রের লিখিত অংশেই ভুল ধরা পড়েছে ৬টি। যেখানে মোট সৃজনশীল প্রশ্নই রয়েছে ৮টি। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, লিখিত অংশের ৫ নং উদ্দীপকে সিগমার মান ০.৫৭ দেওয়া আছে। কিন্তু বাস্তবে সিগমার মান -১ থেকে ০.৫ এর মধ্যেই হয়। অর্থ্যাৎ উদ্দীপকের তথ্য বাস্তবসম্মত নয়। এছাড়া সৃজনশীল ৩ এর গ নং প্রশ্নে কাজের পরিমাণ বের করতে বলা হলেও উচ্চতা বা সরণ দেওয়া হয় নি।

আরও পড়ুন: বিএনপির ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হবে না: মেয়র লিটন

আবার সৃজনশীল ৪ এর ঘ নং প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য, যা ৪ মার্কের জন্য যথার্থ নয়। মুখে-মুখেই করা যায়, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও লাগে না। আর সৃজনশীল ৭ এর গ নং সমাধানের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই, কোনো মাধ্যমেই পানির বেগ নাই। সৃজনশীল ৮ এর ঘ নং প্রশ্নে কেন্দ্রমুখী জানতে চাওয়া ঠিক হয় নি, লম্ব কি না সেটা জানতে চাওয়া বাস্তবসম্মত, অর্থ্যাৎ তথ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আর সৃজনশীল ৬ এর ঘ এর সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।

এদিকে একই প্রশ্নের দুই পরীক্ষা নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে অভিভাবকদের মনে। অনেকেই পোস্ট দিয়েছেন ফেসবুকেও। আরএ ফিজিক্স নামের একটি কোটিং সেন্টার তারে ফেসবুকে পেজে লিখেছেন, ‘রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আজকে বেশি না ৮ টার মধ্যে মাত্র ৬ টা প্রশ্ন ভুল ছিল। সলভ দিয়ে দিলাম, অতো না মিলিয়ে ২য় পত্রের জন্য প্রস্তুতি নাও।’

এ ব্যাপারে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে বলি প্রশ্নটা আমাদের তৈরি না। কারা প্রশ্ন করেছে পরীক্ষার পরে এটি খুঁজে বের করে করার চেষ্টা করবো। আর পরীক্ষার্থীদের যে সুবিধা সেটা আমরা দেওয়ার চেষ্টা করবো। ভুল হলে নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়, সেটাই হবে। তবে আপনার কাছে থেকে প্রথম শুনলাম এমন ভুল হয়েছে। আমরা যাচাই বাছাই করে দেখবো।’

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তো ঢাকাতে আছি। যেটা হয় প্রশ্ন যেখানে হয় পরীক্ষা সেখানে হয় না। এটি আমাদের বোর্ডের প্রশ্ন নয়। অন্য বোর্ডের প্রশ্ন। এটি খুঁজে বের করা হবে কোন বোর্ড থেকে এই প্রশ্নটি এসেছে। তারপরে প্রশ্ন সেটারদের বের করা হবে এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

আরও পড়ুন: বড় জয়ে এশিয়া কাপের সূচনা করল পাকিস্তান

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটি আন্তঃবোর্ডের সভায় তুলবো। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বারবার বলার পরও তারা এটি করে থাকে। পরবর্তী সময়ে এগুলো নিয়ে আমরা দেখবো। শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এটি নিয়ে আলোচনা করে ফলাফলের বিষয়ে দেখা হবে। আমার শিক্ষার্থীদের বিষয়েই সব সময় ভাবি। সুন্দর এটির ফলাফল আসবে এটিই আশা করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর তানবিরুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রশ্নপত্রে ভুল ক্রমেই বাড়ছে। এটি একটি ধরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই কোনো না কোনো ভুল থাকছে। ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার নিঃসন্দেহে মারাত্মক ক্ষতি। দেশে প্রশ্ন প্রনায়নকারীদের আরো সচেতন হতে হবে। তা না হলে এমন ভুল চলতে থাকবে। আর ভূল থেকে শিক্ষার্থীদের ক্ষতিও হবে। অভিভাবকরাও হতাশায় ভুগবে।’

 

 

 

আরপি/এসআর-২৩



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top