রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৩ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২

আখ সংকটে বন্ধ নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল

অর্ধেকে নেমেছে চিনির উৎপাদন


প্রকাশিত:
১৮ জানুয়ারী ২০২৩ ০৫:৫৩

আপডেট:
১৩ মে ২০২৫ ০২:০৪

ছবি: নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিঃ, নাটোর

দেশের বাজারে দফায় দফায় চিনির দাম বেড়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০২ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশীয় চিনি উৎপাদনে এবছর নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেড লক্ষমাত্রার অর্ধেক চিনিও উৎপাদন করতে পারেনি। অথচ চিনিকল এলাকায় কৃষকের মাঠে প্রায় ৩০ হাজার মে.টন আখ দন্ডয়মান রেখে আখ সংকটে বেকায়দায় পড়ে মাড়াই মৌসুম শেষ করে চিনিকল কতৃপক্ষ।

চিনিকল কতৃপক্ষ জানায়, এবছর ২০২২-২৩ মাড়াই মৌসুমে ১ লাখ ৪০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে ৭ শতাংশ হারে ৯ হাজার ৮শ মে. টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে গত ২৫ নভেম্বর আখ মাড়াই শুরু হয়। তবে এবছর ইতিহাসের সর্বনিম্ন মাত্র ৮১ হাজার ৮৪০মে.টন আখ মাড়াই করে গত ১৫ জানুয়ারি ৫২ কর্ম দিবসে মাড়াই মৌসুম শেষ করে কতৃপক্ষ। এতে চিনিকলটি ৫.৩৪ শতাংশ হারে লক্ষমাত্রার অর্ধেকেরও কম মাত্র ৪ হাজার ২ শ মে.টন চিনি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়।

এবিষয়ে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত আখ উৎপাদনে চাষিদের সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করা হয়। কিন্তু কিছু গুড় ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে থেকে ঝণ নেওয়া আখ চাষিদের থেকে উচ্চ মূল্য আখ ক্রয় করে মাড়াই করে। এতে কৃষকরা আখ সরবরাহ না করায় কষ্ট নিয়ে মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছি। তবে মিলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আখের দাম বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবির ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রান্তিক চাষিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য কৃষি বান্ধব সরকার লোকসানের পরও সরকারি চিনিকলটি টিকিয়ে রেখেছে। মিল এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা ভেবে চাষিরা আগামীতে বেশি বেশি আখ মিলে সরবরাহ করবে বলে আশা করেন তিনি।

এদিকে চাষিরা বলছেন, চিনিকলে আখ সরবরাহে দিনদিন আগ্রহ হারাচ্ছেন। চিনিকলে আখ দিলে লোকসান হয়। বাইরে আখ বিক্রি করলে প্রতিমণে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেশি পান ফলে কম দামে চিনিকলে আখ দেওয়ার যৌক্তিকতা নাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিনিকল এলাকায় প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা। যেখানে পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা প্রতি মণ আখের দাম দিচ্ছেন ২৮০-৩০০ টাকা টাকা, সেখানে চিনিকল দেয় ১৮০ টাকা! এছাড়া মাঠে এখনো দন্ডায়মান প্রায় ৩০ হাজার মে.টন আখ আখের মূল্য সহবিভিন্ন অজুহাতে চিনিকলে সরবারহ করেনি আখ চাষিরা।

এবিষয়ে উত্তরবঙ্গ চিনিকল আখ চাষি সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল ও ক্ষ্দ্রু গুড় ব্যবসায়ী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক বলেন, এবার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের আখ মাড়াই দেরিতে শুরু করেছে। আবার মিলে ১৮০ টাকা মণে আখ সরবারহ করলেও চিনিকল কতৃপক্ষ ঠিকমত আখের মূল্য পরিশোধ করে না। অথচ পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা ৩০০ টাকা মণে আখ ক্রয় করে নগদ টাকা প্রদান করে। এতে চাষিরা বাইরে আখের মূল্য বেশি পাওয়ায় চিনিকলে আখ সরবারহে আগ্রহ হারিয়েছে।

 

আরপি / এসআই



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top