রাজশাহী কলেজ বিএনসিসির পথচলা
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের গৌরবোজ্জ্বল ও সাফল্যমণ্ডিত ইতিহাস নিয়ে ১৯৭৯ সালের ২৩ মার্চ জেসিসি ও বিসিসিকে সংগঠিত করে প্রতিষ্ঠা করা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বিএনসিসি। সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির মহান উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনের অন্যতম একটি ইউনিট হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছে রাজশাহী কলেজ বিএনসিসি ইউনিট।
রাজশাহী কলেজের সহশিক্ষা কার্যক্রমের এ সংগঠনটি প্রকৃতিক দূর্যোগ, বৃক্ষরোপণ, জনকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করছে জাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। দেশেব্যাপি বিএনসিসির জাতীয় ও বিভাগ পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় এই ইউনিট প্রমাণ করেছে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতা। সম্মাননা হিসেবে পেয়েছে, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ এ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বিএনসিসি গ্রুপের মেডেল ও সনদ, ২০১৮ ও ২০১৯ এ বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ গ্রুপের ক্রেস্ট। এছাড়া থানা পর্যায়ে বেশ কিছু সম্মাননা।
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে সেনাবাহিনীর ২য় সারির স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনের মূলমন্ত্র হলো জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও একতা। ৩ টি শাখা নিয়ে কাজ করা বিএনসিসির রাজশাহী কলেজ ইউনিট কাজ করে সেনা শাখা নিয়ে। সেনা শাখার অধীনে বিএনসিসির রয়েছে ৫ টি রেজিমেন্ট। রেজিমেন্টগুলো হলো: রমনা রেজিমেন্ট, ময়নামতি রেজিমেন্ট, কর্ণফুলি রেজিমেন্ট, মহাস্থান রেজিমেন্ট ও সুন্দরবন রেজিমেন্ট। এর মধ্যে মহাস্থান রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানির সদর দপ্তর হলো রাজশাহী কলেজ বিএনসিসি ইউনিট। যার বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩ প্লাটুন।
পড়াশোনার পাশাপাশি নেতৃত্ব বিকাশসহ নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে রাজশাহী কলেজে রয়েছে প্রায় ৪০ টির মতো সহশিক্ষা সংগঠন। আর এ সংগঠনগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের পছন্দের সারিতে থাকা বেশ কয়েকটি সংগঠনের অন্যতম জায়গাও এটি। শারীরিক ও মনন বিকাশে দেশ ও দেশের বাইরে ভ্রমণসহ সামরিক প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকে এ সংগঠনে।
রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী ক্যাডেট আন্ডার অফিসার রায়হান সৌরভ বলেন, রাজশাহী কলেজে অনেকগুলো সংগঠন আছে। এদের চাইতে আমাদের সংগঠনটি অন্য রকম। কারণ এটি আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এখানে আমাদের অস্ত্র, ড্রিল, রণকৌশল, কমান্ড ও নেতৃত্ব বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। দেশের ভেতরে বিভিন্ন জেলায় ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগও থাকে। আমাদের ক্যাডেটদেরকে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর চেয়ে স্মার্ট, নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
২০১৯ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে বিএনসিসির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহেমান হিসেবে দিল্লি ভ্রমণ করেন রাজশাহী কলেজ বিএনসিসির ক্যাডেট ফাবলিহা আফাফ সারোয়ার। তিনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আমি একাদশ শ্রেণিতে থাকতেই বিএনসিসির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মেহমান হিসেবে ভারত সফরের সুযোগ পাই। যেটা আমার সৌভাগ্য। তবে যোগ্যতা দিয়েও নিজেকে প্রমাণ করতে হয়েছিলো। ইউনিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। সফরে আমরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বাসায় তাদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাই। এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় ডিনারও করি। যা হয়তো এই ইউনিট না থাকলে পেতাম না। শুধু প্রশিক্ষণ না ইউনিটকে ভালোবেসেছিলাম বলেও হয়তো এ সুযোগ পেয়েছিলাম।
রাজশাহী কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল খালেক বলেন, বিএনসিসি রাজশাহী কলেজের প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন। এখানে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগঠনটি সদস্য সংগ্রহ করে। এখান থেকে তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ পায়। আমাদের ক্যাডেটরা কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। কলেজের বাইরেও এ সংগঠনের ভালো সুনাম আছে। এখান থেকে যারা ভালো করে তারা অনেক সময় সামরিক বাহিনীতে যোগদানের সুযোগ পায়। ক্যাডেটদের জন্যে কোটাও আছে। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
আরপি/এমআই
বিষয়: রাজশাহী কলেজ বিএনসিসি

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: