রাজশাহী মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট ২০২৫, ২২শে শ্রাবণ ১৪৩২


শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া মওকুফের আহবান হাবিপ্রবি প্রশাসনের


প্রকাশিত:
৩ মে ২০২০ ১৯:১৬

আপডেট:
৫ আগস্ট ২০২৫ ২৩:১২

 

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯।প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে মেস ও বাসা ভাড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

উত্তর বঙ্গের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠটিতে এগারো হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত, নিন্ম-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা। এসব পরিবার থেকে উঠে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ব্যয় টিউশনি ও পার্টটাইমের জবের মাধ্যমে নির্বাহ হয়। দেশের এই অঘোষিত লকডাউনে টিউশনিতে যেতে না পারায় সেই আয় এবং রোজগারের পথটিও বন্ধ হয়ে গেছে।এমন পরিস্থিতিতে তাদের পিতা-মাতাও অর্থের যোগান দিতে পারছে না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন শহর এবং ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকার মেসে। কেউ কেউ বাসা বাড়ির রুম ভাড়া নিয়েও থাকেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণপ্রাজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ ১৬ই মে ২০২০ইং পর্যন্ত বাড়ায় বর্তমানে নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা ।
তথাপি এই করোনা পরিস্থিতিতেও মেস বা বাসার মালিক ফোন করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে ভাড়া পরিশোধের কথা বলছেন। যা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যে শিক্ষার্থীদের পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল কিংবা নিজেরা টিউশনি করে খরচ জোগাড় করতো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। তাই অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে মেস এবং বাসা ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে আসছিলো ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এহেন দাবির প্রেক্ষিতে মেস মালিক সমিতির কাছে সাধারন ছুটিকালীন সময়ে মেস ভাড়া মওকুফ এবং পরিশোধ এর সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে ২৫/৪/২০২০ ইং তারিখ মেস মালিক সমিতির সভাপতি বরাবর একটি চিঠি দেয় ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড.ইমরান পারভেজ। চিঠি পেয়ে বসতে সম্মত হলেও পরে কোন এক অজ্ঞাতকারনে তাঁরা আর বসে নি।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড.ইমরান পারভেজ বলেন ,আপনার মেসে অবস্থানকারী অনেক ছাত্র-ছাত্রী অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবার থেকে পড়তে এসেছে,অনেক শিক্ষাথীরা টিউশনি করে নিজ খরচ যোগাড় করে থাকে যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।এ ছাড়াও অনেকের পরিবার বিভিন্ন রকম উৎস থেকে আয় করে থাকেন, যা এখন বন্ধ রয়েছে। বিধায় অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষে মেস ভাড়া প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়েছে, এমনকি সম্ভব হচ্ছে না।শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে মেস ভাড়া মওকুফ এর দাবী তুলেছে। এ ব্যাপারটি তারা যেমন আপনাদেরকে অবগত করেছে, তেমনি আমাদেরকেও অবগত করেছে।

আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনো এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করি না, করার সুযোগও নেই। তথাপি ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের পরিবারের কথা, তথা সারাদেশের অবস্থা বিবেচনাপূর্বক এ দূযোর্গকালীন সময়ের জন্য এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে আপনাদের মহানুভবতা এবং উদারতা একান্তভাবে কাম্য।

শাকিল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই পরিস্থিতিতে অনেকের পরিবারের পক্ষে মেসের ভাড়া দেওয়া কঠিন। যারা টিউশনি করে চলতো এখন তাঁদের বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। কীভাবে তাঁরা মেস ভাড়া দিবে সেটাও ভাবার বিষয়। সবাইকে পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, না হয় এই দূর্যোগ কেটে উঠা কষ্টকর হয়ে যাবে। মানবিক কারনে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়ার বিষয়ে ছাড় দেয়া উচিৎ। এই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।”

 

আরপি/ এআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top