রাজশাহীতে নতুন প্রজাপতির খোঁজ পেল রাবির চার শিক্ষার্থী
                                বাংলাদেশে নতুন ধরনের একটি প্রজাপতির সন্ধান পাওয়া গেছে। রাজশাহী নগরীর শিমলা, টি-বাঁধ এলাকায় সর্বপ্রথম দেখা গেছে এই প্রজাপতি। চলতি মাসের ১ তারিখ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতিপ্রেমী চার শিক্ষার্থী প্রজাপতির নতুন এই প্রজাতির আবিস্কার করেন।
এর আগে দেশের অন্য কোথাও এটিকে দেখা যায়নি। যেহুতু এটি নতুন আবিস্কার তাই এখনো এটির বাংলা নাম দেওয়া হয়নি। তবে এর ইংরেজি নাম ‘কমন থ্রি রিং’ (Common Three Ring) বা ‘আফ্রিকান রিংলেট’ (African Ringlet) এবং বৈজ্ঞানিক নাম ‘ইপথিমা অ্যাস্টেরোপ’ (Ypthima asterope)।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরুল কায়েস নতুন এই প্রজাপতি খুঁজে পাওয়ার দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, রাজশাহী নগরীর শিমলা, টি-বাঁধ এলাকায় আমাদের একটি বৈঠকের জায়গা আছে। আমরা যারা প্রকৃতি নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী তারা সেখানে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয়। ১ অক্টোবর সেখানে আমাদের গ্রুপের সদস্য আকাশ মজুমদার, মাহমুদুল হক ওলি ও তুষার ইসলাম সর্বপ্রথম প্রজাপতিটি দেখতে পাই। প্রজাপতিটি আলাদা বুঝতে পেরে তারা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানায়। তখন আমি তাড়াতাড়ি করে সেখানে গিয়ে ছবি তুলি। আমার আগেও তারা ছবি তুলেছিল, আমারটাই প্রথম তোলা ছবি না। পরে প্রজাপতিটির পরিচয়ের জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশের যারা বাটারফ্লাই সম্পর্কে অভিজ্ঞ আছেন তারা জানান যে, এটা ‘কমন থ্রি রিং’। সেখানেই কনফর্ম হওয়া যায় যে, এই প্রজাতীটি বাংলাদেশে প্রথম।
প্রজাপতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ইমরুল কায়েস বলেন, প্রজাপতির মধ্যে বেশ কিছু পরিবার আছে। তার মধ্যে ব্রাশ-ফুটেড বাটারফ্লাই (Brush Footed butterfly) অন্যতম। এর মধ্যে কিছু প্রজাপতি বাদামি রংয়ের হয়। তাদের গায়ে গোল গোল চক্র থাকে যেটাকে আমরা রিং বলি। এই রিং জাতীয় প্রজাপতি আমাদের দেশে সচারচর তিন ধরনের দেখা যায়। সেগুলো হলো- কমন ফাইভ রিং, কমন ফোর রিং ও লেসার থ্রি রিং। এদের মধ্যে ‘লেসার থ্রি রিং’ টা বাংলাদেশে কম দেখা যায়। কিন্তু আমরা যে প্রজাপতিটি আবিস্কার করেছি সেটা হচ্ছে ‘কমন থ্রি রিং’ বা ‘আফ্রিকান রিংলেট’। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘ইপথিমা অ্যাস্টেরোপ’ (Ypthima asterope)। এটি এটা ‘লেসার থ্রি রিং’ এর বড় জাতেরটা।
বাংলা নাম দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যেহুতু এটি নতুন আবিস্কার তাই এখনো এটির বাংলা নাম দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যার যারা প্রফেসর আছেন তারা এটির নামকরণ করতে পারেন। বাংলা একাডেমিও দিতে পারবে, কিন্তু তাদের এগুলোতে তেমন আগ্রহ থাকে না। সাধারণত ল্যাটিন নামের বাংলা অনুবাদ বা যে এলাকায় সন্ধান পাওয়া যায় সে এলাকার মানুষরা সেটিকে কি নামে ডাকে এসবের উপর ভিত্তি করে বাংলা নাম নির্ধারণ করা হয়।
বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী মো. ইমরুল কায়েস জানান, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশের ২০১৫ সালের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে রেকর্ডকৃত প্রজাপতির সংখ্যা ৩০৫টি। তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দেশের বন-জঙ্গলসহ সমস্ত সমতল ভূমিতে প্রায় ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতির অস্তিত্ব আছে।
আরপি/আআ
বিষয়: রাজশাহী প্রজাপতি শিক্ষার্থী রাবি

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: