রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৩ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২

ঈদ উপহার নিয়ে অসহায়দের বাড়ি বাড়ি নগরীর তরুণরা


প্রকাশিত:
২০ মে ২০২০ ০৬:১৬

আপডেট:
২০ মে ২০২০ ০৬:২৯

ঈদ উপহার নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন রাজশাহীর কিছু উদ্যোমী তরুণ

করোনার প্রাদুর্ভাবে সাময়িক সমস্যায় পড়া মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের সম্মানের কথা চিন্তা করে রাতের আঁধারে গোপনে ঘরে ঘরে গিয়ে ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছেন রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার জলিলের মোড় এলাকার তরুণরা।

সোমবার (১৮ মে) সন্ধ্যার পর ঐ এলাকার ৩৫০টি দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় এসব উপহার সামগ্রী। করোনা পরিস্থিতিতে পরিবারগুলোর কষ্ট দূর করতেই এলাকার তরুণদের এ উপহার বিতরণ কর্মসূচি বলে জানান তারা।

‘এবারের ঈদ খুশি ভাগাভাগি করে নেবার’ স্লোগানকে সামনে রেখে তরুণরা প্রত্যেক পরিবারের মাঝে ৭০০ গ্রাম সেমাই, ১ কেজি চিনি, ২ কেজি আটা, সাড়ে ৭ কেজি চাল ও একটি ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড উপহার দেন।

জানা গেছে, লকডাউনে বিপর্যস্ত এলাকার অসহায় ও মধ্যবিত্ত মানুষ, যারা সমস্যায় আছেন কিন্তু মুখফুটে বলতে পারবে না, এই মানুষগুলোর জন্য কিছু করার তাড়না থেকেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বাবু, আব্দুর রহমান মুন্না, মুসফিকুর রহমান রবিন, ফায়সাল আহম্মেদ ও এলাকার কয়েকজন যুবক। তাদের এ উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হন এলাকার ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, প্রবাসী ও অন্যান্য পেশাজীবীরা। প্রত্যেকে নিজেদের সাধ্যমত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।

প্রচার বিমুখ তরুণরা জানান, প্রস্তাবটি শোনার পর এটি বাস্তবায়নের জন্য অর্থ, শ্রম, বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে এলাকার ছোট বড় অনেকে মহৎ এ কাজে এগিয়ে এসেছেন।

তরুণদের কয়েকজন বলেন, আমরা এলাকার স্বচ্ছলদের কাছে আমাদের আহ্বান পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। যারা শুনেছেন তাদের বেশিরভাগই এগিয়ে এসেছেন। আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। অনেকে আমাদেরকে এগিয়ে যাবার প্রেরণা দিয়েছেন।

বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন রাজশাহীর তরুণরা

উদ্যোমী এই তরুণরা বলেন, গল্পটা ছিলো মানবতার, ভালোবাসার। ৪-৫ জন মিলে ১৫-২০ জনের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা। আমাদের একতা ও সবাইকে নিয়ে সবার পাশে দাঁড়ানোর সক্ষমতায় এটা এখন মহাযজ্ঞে পরিনত হয়েছে।

যাদের উপহার দেয়া হবে তাদের ছবি না তুলে নাম গোপন রাখা হচ্ছে জানিয়ে তরুণরা বলেন, হাতে গোনা কয়েকজনকে নিয়ে আমরা ঈদ উপহার বিতরণ শুরু করেছি। এর অন্যতম কারন- সামাজিক দূরত্ব ও রাষ্ট্রীয় বিধি মেনে চলা। যাদের উপহার দেওয়া হচ্ছে, তাদের কোনো ছবি তোলা বা নাম প্রকাশ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

তারা বলেন, কঠোরভাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য আমরা উপহার সামগ্রী গ্রহণকারীদের একটা তালিকা সংরক্ষণ করছি। তবে এটি কখনোই প্রকাশ করা হবে না। শুধুমাত্র স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বা কেউ কোনো অনিয়মের প্রশ্ন তুললে তা প্রমাণের জন্য এটি সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

এর আগে এই তরুণরা গত ২ এপ্রিল লকডাউনের ৯ম দিনে ১৫৫ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী উপহার তুলে দেন। সেসময় প্রতি পরিবারকে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, আধা কেজি তেল, আধা কেজি লবন, ২ কেজি আলু ও সাবান প্রদান করেন তারা।

এছাড়াও এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন এই তরুণরা। এলাকায় জীবানুনাশক স্প্রে করা, মসজিদে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে সালাত আদায়ে সহায়তাসহ নানান সামাজিক কাজগুলোতে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন তারা।

 

আরপি/ এএন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top