রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট ২০২৫, ১২ই ভাদ্র ১৪৩২

রাজশাহীতে বিনামূল্যে খাবার বিলি করেন চা বিক্রেতা


প্রকাশিত:
২৮ এপ্রিল ২০২১ ০২:৪৩

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২১ ২০:৫৩

ছবি: সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন ফারুক

ষাট বছরের বৃদ্ধা জুলেখা বেগম। স্বামী মারা যাওয়ার রাজশাহী নগরীতে ভিক্ষা করেন। নগরীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরের (রেলগেট) পাশে কবরস্থান সংলগ্ন ফুটপাতে এসেছেন বিনামূল্যে ইফতার নিতে।

তিনি জানান, প্রথম রমজান থেকে শুরু করে প্রতিদিনিই এখানে খাবার দেয়। এখানে কোন দিন সবজি খিচুড়ি, আবার কোন দিন বিরিয়ানি দেয়। লকডাউনে দুবেলা পেট পুরে খাবার পাচ্ছেন না। তাই প্রতিদিন একবেলা পেট পুরে খাবার আশায় প্রতিদিনই আসেন তিনি। শুধু জুলেখা বেগম নয়, তার মতো আরও শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে দেখা গেল এ ফুটপাতে খাবার নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।

জানা যায়, নগরের কামারুজ্জামান চত্বরের পাশে কবরস্থানসংলগ্ন ফুটপাতে খুপরি দোকানে চা বিক্রি করেন ফারুক আহমেদ। এ থেকে তার যা আয় হয় এর অর্ধেকটা খরচ করেন নিজের সংসারের জন্য, বাকিটা দিয়ে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন তিনি।

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে সপ্তাহে একদিন চলে তার এই মহতি উদ্যোগ। তবে এবার রমজান মাস ও করোনা পরিস্থিতিতে বিকেল পর প্রতিদিনই শতাধিক অভুক্ত অসহায় এসব মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছেন তিনি। শতাধিক মানুষের বিশাল আয়োজনের সমস্ত কাটাবাছার কাজ করেন তার স্ত্রী পলি বেগম ও তার দুই মেয়ে। মাঝে মাঝে বাবাকে সঙ্গ দেন তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে। আর রান্না থেকে বিতরণে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পালন করেন সেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব।

ফারুকের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, বিরাট হাঁড়িতে রান্না শেষে চলছে খাবার বিলির প্রস্তুতি । আর ফুটপাতে দীর্ঘ লাইনে সবাই অপেক্ষা করছে খাবারের জন্য। ফিরেছেনও একবেলার খাবার নিয়ে।

ফারুক আহম্মেদ জানান, ১৯৯০ সালে রাজশাহী শহরে এসে ৪দিন না খেয়ে থাকার তিক্ততা থেকে ভেবেছিলেন অভুক্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিবেন তিনি। সেই চিন্তা থেকে বছর পাঁচেক আগে এক শুক্রবারে দুই কেজি চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে অভুক্ত কিছু মানুষকে নিয়ে খেতে বসেন তিনি।

তিনি আরো জানান, তার ব্যাক্তি উদ্যোগে সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার খাবার বিতরণ শুরু করলে প্রতি শুক্রবারেই অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে, যা তাঁর একার পক্ষে সংস্থান করা সম্ভব হয় না। তাই কেউ সহযোগিতা করলে তিনি ফিরিয়ে দেন না।

তিনি জানান, মানুষের সহযোগিতা পেয়ে তিনি খাবারের মানোন্নয়ন করেছেন। আগে সবজি-খিচুড়ি করতেন। এখন করেন বিরিয়ানি। আগে দুই কেজি চালের খিচুড়ি করতেন। এখন করেন এক মণ চাল দিয়ে। আগে মাংস দিতে পারতেন না। এখন মাংস দেন।

বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে। নিচের লিংকে ক্লিক করুন

https://fb.watch/58SHm28Pqn/

আরপি/ এসআই



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top