রাজশাহীর চারঘাট
পড়ে আছে নোংরা বেসিন, কোথায় সাবান-পানি
রাজশাহীর চারঘাটে করোনার সংক্রমণ রোধে পথচারীদের জন্য পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছিল। কোথাও স্থাপনের কয়েক দিনের মধ্যেই অকেজো, কোথাও পানি থাকলেও নেই সাবান, আবার কোথায় বেসিনও হারিয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অকেজা হয়ে গেছে হাত ধোয়া ব্যবস্থা।
জানা গেছে, করোনার শুরুতে পৌর কর্তৃপক্ষ ঘটা করে সড়কে ব্লিচিং পাউডার, মাস্ক সরবারহ, হাত ধোয়ার ব্যাবস্থা করাসহ করোনা প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়। কিন্তু ফটোসেশনের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। এখন এসবে ভাটা পড়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে প্রথম শর্ত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার প্রধান উপকরণ বেসিনগুলো অকেজো পড়ে আছে।
পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র বাসষ্ট্যান্ড, চারমাথা মোড়, হাইস্কুল গেট, কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রথম কিছু দিন ভালো ছিল। সেখানে সাবান, পানি সবই ছিল। এখন সাবানও নেই, পানিও নেই, পাত্র গুলোও নিরুদ্দেশ।
বেসিনের পাশে বসেই কাজ করেন কারিগর রাজ কুমার। তিনি জানান, 'করোনা শুরুর প্রথম দিকে সাবান দেওয়া হয়েছিল। এখন পানিও নেই, সাবানও নেই। তারপর আর কে কার খবর রাখে।'
অকেজো হয়ে আছে পৌর ভবনে ঢোকার হাত ধোয়ার বেসিনও। সেখানে পানি আছে, তবে নেই কোনো সাবান। যার ফলে পৌরসভায় প্রবেশের সময় সাধারণ মানুষ হাত না ধুয়েই প্রবেশ করছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ বাড়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবহার করা হয়নি।
পৌরসভায় প্রবেশপথে হাত না ধুয়ে কেন প্রবেশ করছেন আব্দুল হাকিম নামের একজনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, 'বেসিন লাগানো হয়েছে তা লাগানো পর্যন্তই শেষ। প্রথম দিকে সবকিছু সচল থাকলেও এখন আর কোনো গুরুত্ব নেই। সেখানে যে হাত ধুবো তাতে তো সাবান নেই। হাত ধুবো কীভাবে? তাই হাত না ধুয়েই প্রবেশ করছি।’
এছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েক জায়গায় হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছিল। তবে সেগুলোতেও ঠিকমত সাবান পানি থাকে না।
চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার মমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে কিছুক্ষণ পরপর হাত ধোয়া কার্যকরী পদক্ষেপ, যা চিকিৎসকসহ সবাই বলছেন। মানুষের হাত ধোয়ার জন্য টাকা খরচ করে বেসিন বসানো হয়েছে শুধু মানুষকে দেখানোর জন্য। যদি তাই না হবে তাহলে কেন স্থাপিত বেসিনে সাবান থাকে না, আবার পানি থাকে না, আবার কোথাও বেসিনও থাকেনা।’
চারঘাট পৌরসভার সচিব রবিউল ইসলাম বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় বেসিন স্থাপন করা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের গুরুত্ব না থাকায় সেগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে। তবে আগামী সপ্তাহের দিকে বেসিনগুলো মেরামত করে আবার চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কে এম নাসির উদ্দীন বলেন, সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হাতধোয়ার বেসিন বসানো হয়েছে। সেগুলো ঠিকমত দেখভাল করা হবে। আগামীতে প্রকল্প পেলে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও বেসিন স্থাপন করা হবে।
আরপি/এসকে
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: