রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


নিরাপত্তাহীনতায় আবাসিক শিক্ষার্থীরা

ল্যাপটপ চুরির চারদিন পেরোলেও নীরব রাজশাহী কলেজ প্রশাসন


প্রকাশিত:
৮ মে ২০২৫ ১৯:২০

আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ২৩:৩৯

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কলেজ প্রশাসন ও হোস্টেল কর্তৃপক্ষ এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং ‘প্রক্রিয়া চলছে’ নামক অস্পষ্ট আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ আছেন সংশ্লিষ্টরা। কয়েক মাসের ব্যবধানে দুইবার এমন চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যেও চরম নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত ৪ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভবনের (সি-ব্লক) ১০৬ নম্বর কক্ষ থেকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান সরকারের ল্যাপটপ চুরি হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন মুখোশ পরা ব্যক্তি তার রুমে প্রবেশ করে ল্যাপটপ নিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রায়হান সরকার বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো ল্যাপটপ রেখে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি জিনিস নেই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বোঝা যায়, চোর ভোরে ঢুকেছে। কিন্তু প্রশাসন শুধু দেখে গেছে। এখন পর্যন্ত কিছুই করেনি।

হোস্টেল প্রশাসনের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, চুরির পরপরই ডায়েরি করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘আমরা চাইলে গেট বন্ধ রাখতে পারি, কিন্তু ছাত্ররা সেটা মানে না।’

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. যহুর আলী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পুলিশের কাছে ডায়েরি করা হয়েছে, আমরা শুধু পরামর্শ দিচ্ছি।’

এদিকে, গত ডিসেম্বর ছাত্রাবাসের একই ভবনের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু রায়হানের ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু ঘটনার সাড়ে চার মাস পার হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে নি কলেজ প্রশাসন। এবারও একইভাবে সংশ্লিষ্টদের এমন দায়সারা আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতায় তারা আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গরীব শিক্ষার্থীরা যারা ফ্রিল্যান্সিং কিংবা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন, তারা এই ল্যাপটপের ওপর নির্ভর করেন। কলেজ প্রশাসন আবারও নীরব থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রয়োজনে আন্দোলনের পথেই হাঁটতে হবে বলেও প্রশাসন সতর্ক করেন তারা।

জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরেও কোনো একশন নেই। ল্যাপটপ, মোবাইল, টাকা চুরি এখন নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু প্রশাসন কেবল আশ্বাস দিয়েই পার পাচ্ছে।’

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, ‘প্রশাসনের মাথাব্যথা নেই। আমরা আজ (বুধবার) অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি, কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছি, এরপর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।’

এদিকে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, সিসিটিভি ফুটেজে মাস্ক পরিহিত একজনকে দেখা গেছে। শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top