রাজশাহী সোমবার, ২৫শে আগস্ট ২০২৫, ১১ই ভাদ্র ১৪৩২

প্রমত্ত বড়াল এখন ফসলের মাঠ


প্রকাশিত:
৫ জানুয়ারী ২০২১ ০০:৩৯

আপডেট:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ০৬:৫০

প্রমত্ত পদ্মার শাখা বড়াল নদী নাব্য হারিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে পলি জমে দুপাড় চেপে গেছে এবং নদীর পাড়ে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। স্বয়ং চারঘাট পৌরসভা নদীর ভেতরে রাস্তা ও পাবলিক টয়লেট নির্মান করেছে।

নদীর চর ভূমিগ্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে এ নদীর বুকে ধান, গম, মশুর, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন আবাদ করা হচ্ছে। জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট থেকে পদ্মার শাখা হিসেবে বড়াল নদীর উৎপত্তি হয়ে বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে হুড়া সাগরের বুকে মিশে নাকালিয়ায় যমুনায় পড়েছে।

এক সময় যোগাযোগের সুবিধার কারণে বড়াল নদের দুই পাড়ে চারঘাট বাজার, পুঠিমারী বাজার, আড়ানী বাজার, রুস্তমপুর পশুহাট, জামনগর বাজার, বাঁশবাড়িয়া বাজার, তমালতলা বাজার, বাগাতিপাড়া থানা, দয়ারামপুর সেনানিবাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৮১-৮২ অর্থ বছরে নদের তীরবর্তী উপজেলাগুলোকে বন্যামুক্ত করার জন্য উৎসমুখ চারঘাটে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ এবং যাতায়াতের জন্য নদীর বুকে একাধিক ব্রিজ নির্মাণ করায় এ নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রন্থ হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর চারঘাট উপজেলার সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বড়াল নদীর বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট ও বাঁধ নির্মাণের ফলে ক্রমান্বয়ে বড়াল শুকিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। এখন বড়ালে তলদেশে বিভিন্ন আবাদ করা হচ্ছে। বর্ষায় কিছু পানি জমলেও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই মরা এ নদী খালে পরিণত হয়।

পুঠিমারী গ্রামের কৃষক মিনহাজ আলী বলেন, বড়ালে পানি না থাকায় এলাকার কৃষকরা নদের বুক জুড়ে ফসলের আবাদ করেন। পরিণত হয় গবাদি পশুর চারণ ক্ষেত্রে। এক সময় যে বড়ালের পানির সেচে নদীর তীরবর্তী মানুষ তাদের জমিতে ফসল ফলাত। এখন সে নদের বুকে অগভীর নলকূপ বসিয়ে চলে ধান গম চাষ।

বড়াল রক্ষা আন্দোলন চারঘাট উপজেলা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, পৌরসভাসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল প্রতিনিয়ত বড়াল নদীতে স্থাপনা তৈরি করছে। বড়াল নদীতে পানি না থাকায় এ নদের ধারে গড়ে উঠা ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রগুলো তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সেচসহ প্রতিদিনের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এখনই সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করে পুনঃখনন করা না হলে বড়াল তার ঐতিহ্য হারিয়ে শেষ হয়ে যাবে।

 

আরপি / এমবি-৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top